মেয়ে মানুষদের পরীর মতো দেখালেও তারা কিন্তু পরী নই!

মেয়ে মানুষদের পরীর মতো দেখালেও তারা কিন্তু পরী নই!

মেয়ে টি দেখতে ঠিক পরীর মত! আমরা কারও রুপের প্রসংশা ও তুলনা করার জন্য এমন বিস্ময় বাক্য ব্যবহার করি। এ প্রসংশা শুধু মাত্র যে ছেলেরা করে তা নই। মেয়ে মানুষরা ও একই ভাবে অন্যের রূপের প্রসংশা করেন। যদি অন্যের রূপ দেখে অতি অল্পতেই মুগ্ধ হই তবে আমরা পরশ্রীকাতর। অনেকেই রূপে মুগ্ধ হয়ে আগ বাড়িয়ে কোন কারণ ছাড়া ছেলে বা মেয়ে মানুষের সাথে ভাব করার চেষ্টা করে। যা নির্লজ্জ ও পরশ্রীকাতর ব্যক্তিকে নির্দেশ করে। আমরা বাহিরের রূপ দেখে মানুষকে বিচার করি যা ভুল। একটি মেয়ে অথবা একটি ছেলের মুল্যায়নে বাহ্যিক রূপই সব কিছু নই।

মেয়ে মানুষদের পরীর মতো দেখালেও তারা কিন্তু পরী নই!

যদি কাউকে অথবা কারও সৌন্দর্য্যকে বিচার করতে হয় তবে তার গুণ দেখেই করা উচিত। আমি বাহিরের সৌন্দর্য্য বা চেহারাকে কোন ভাবেই খাটো বা হিংসা করছি না। বাস্তব সত্য হলো, জগতের অধিকাংশ কুৎসিত রূপই সুন্দরের মাঝেই লুকানো থাকে। অনেকের কাছে বিষয়টি অবাক করার মত হলেও একথা নিতান্তই সত্য। আচার আচরণ বা গুণের দিক থেকে অধিকাংশ ফর্সা বা সাদা চেহারার মানুষ সংকীর্ণ মনের পরিচয় দিয়ে থাকেন। পক্ষান্তরে একজন কালো বা শ্যামবর্ণের মানুষের ব্যবহার সরল বা সাদাসিধে। উত্তরাধীকার বা বংশগত প্রভাব না থাকলে প্রকৃতিগত ভাবে তারা নিরহংকার এবং উদার মনের। এখানে আমি বার বার অধিকাংশ মানুষের কথা বলছি, সবাই কিন্তু নই।

মেয়ে মানুষদের পরীর মতো দেখালেও তারা কিন্তু পরী নই!

সৃষ্টি অথবা সৃষ্টি রহস্যের এক মাত্র ব্যাখ্যা শুধু মাত্র সৃষ্টিকর্তাই দিতে পারেন, অন্য আর কেউ নই। সাধারণত বাহিরের দিক থেকে রূপের মাধুরী মেশানো ফর্সা অথবা সাদা চেহারার মানুষরা নিজেদের রুপ নিয়ে গর্ব বা অহংকার করে। রূপের কারণে হয়তো তারা কালো মানুষের তুলনায় সংকীর্ণ বা ছোট মন মানসিকতার হয়। তুলনামুলক ভাবে তাদের আচার আচরণ কিছুটা রুক্ষ্মও হয়। অপর দিকে একজন সাদামাঠা চেহারার মানুষ একান্ত ভাবেই সাধারণ। আচরণের দিক থেকে সে সহনশীল, ভদ্র, নম্র এবং বিনয়ী। তার আচরণে রুক্ষ্মতা, জটিলতা বা অহংকারী মানসিকতার উপস্থিতি কম। এ লেখায় একাধারে ফর্সা বা কালো কারও হতাশ হবার কারণ নেই, এটি একটি সমষ্টিক ধারণা মাত্র।

ধরুন আপনার এবং আপনার পরিবারের অনেক দিনের একটি সখ আছে। ছেলের জন্য একটা ঘর উজ্জ্বল করা চাঁদের মত সুন্দরী বউ আনবেন। এই আশায় অনেক ঘর দেখে বেছে শুনে ছেলের জন্য মনের মত বউও আনলেন। বিয়ের পর আস্তে আস্তে আপনার ছেলে বউ এর ছলা কলায় আপনার সোনার ছেলে আচরণে মেরুদন্ডহীনে পরিণত হলো। সে বউ এর কথায় ওঠে, বসে। একটা মেয়ের কারণে এখন নিজের সন্তান আপনাদের অপমান, অপদস্ত করতে এবং মুখের উপর কথা বলতে ছাড়ছে না। তথাকথিত রূপবতী সেই মেয়ে আজ বৌমা হবার ফলে আপনাদের প্রায় বাড়ী ছাড়ার মত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বুঝুন রূপের মহত্ব, অনেক পরিবারেই এমন হয়।

আবার বিপরীত উদাহরণে আপনি আপনার সরল সাধাসিদে মেয়ে এর সুখের জন্য। খুব সখ করে অনেক বেছে, খুঁজে একটি সুদর্শন ছেলে দেখে মেয়ের বিয়ে দিলেন। আপনার আশা একমাত্র আদরের মেয়ে টি স্বামীর ঘরে সুখে থাকবে। কিন্তু আপনার সে আশা গুড়ে বালি। বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই আপনি জানতে পেরেছেন। সেই সুদর্শন জামাই এবং তার পরিবার যৌতুকের জন্য আপনার মেয়ে কে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করছে। জামাই এর দাবী শশুড় বাড়ী হতে উল্লেখযোগ্য পরিমান উপঢৌকন এবং অর্থ জামাইকে দিতে হবে। এবার আপনি নিশ্চয় বাহ্যিক সৌন্দর্য্যের মজা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন! তাহলে ভাবুন তো, সৌন্দর্য্যের ভিতরে কুৎসিত রূপ আসলেই আছে কিনা!

মেয়ে মানুষদের পরীর মতো দেখালেও তারা কিন্তু পরী নই!

এখানে আমি কিছু বাস্তব চিত্র লেখার মাধ্যমে ফুটে তুলেছি মাত্র। কারও সৌন্দর্য্যকে কটাক্ষ করে কোন ভাবে কষ্ট দেয়া আমার লেখার লক্ষ্য নই। আমাদের জীবনে সব সময় জটিলতা, ব্যতিক্রম ছিল এবং থাকবে। একজন মানুষের সঠিক এবং প্রকৃত মুল্যায়নের জন্য বাহিরের সৌন্দর্য্যের বেশী ভূমিকা নেই। বাহিরের সুন্দর দিকটা আমাদের চোখের তৃপ্তি আনে আর আত্মার তৃপ্তি আনে মনের ভিতরের সৌন্দর্য্য। তাই কল্পনায় দেখা পরীর সাথে আদৌ আমাদের বাহ্যিক সৌন্দর্য্যের তুলনা উচিত নই। কোন মেয়ে বা ছেলে অথবা উভয়কে সুন্দর বা সুন্দরী বলতে হলে। তাকে হৃদয়ের গভীর থেকে পর্যবেক্ষণ করে তবেই সুন্দর বলা উচিত। নচেৎ প্রকৃত সুন্দরের প্রতি অবিচার করা হবে।

Leave a Reply