সন্তানের অধঃপতনের জন্য সার্বিক ভাবে দায়ী কে, বাবা না মা। এ প্রশ্নটি অভিভাবক, পরিবার, সমাজ এবং সুধীজনদের কাছে বার বার ঘুরে ফিরে এসেছে। তারা কখনও অভিযোগের আঙ্গুল তোলেন বাবার দিকে আবার কখনও মায়ের দিকে। যুক্তি তর্ক দিয়ে তারা যেমন বোঝান আমরা তেমনই বুঝি। অর্থাৎ তারা বাবাকে দায়ী করলে সেদিকে সায় দিই আবার মা কে দায়ী করলে সেদিকেও সায় দিই। আমাদের ভূমিকার ক্ষেত্রে, এ যেন অনেকটা, দুই নৌকায় পা দেয়া। সহজ কথায় সায় দেবার ক্ষেত্রে উভয় কুল রক্ষায় আমরা পারদর্শী। আসলে সবাই, বরের ঘরের মাসী আর কনের ঘরের পিসির ভুমিকা পালন করে আসছি। এ যেন, অনেকটা রোবটের কাজ কর্মের মত হয়ে যায়।
বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা যদিও নারী পুরুষদের সম অধিকার নিশ্চিত করতে বদ্ধ পরিকর। তারপরও নারীরা পুরুষের চাইতে কাজের ক্ষেত্র বিচারে অনেকটা দুর্বল। তাই সংসারের সদস্যদের জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের জন্য। সক্ষম হিসেবে পুরুষকে বাড়ীর বাইরে মাঠে, ঘাটে, কল কারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা ইত্যাদি কর্মক্ষেত্রে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যস্ত থাকতে হয়। এ দিক বিচারে একজন পুরুষ দিনের বেলায় সন্তান বা সংসারে খুব কম সময় দিতে পারেন। রাতের সময়টুকু স্বাভাবিক ভাবে তারা বিশ্রাম করে। তাই পুরুষরা সে সময় টুকু পরিবার বা সন্তান এর সাথে একান্তে কাটানোর পক্ষে। নিজের সন্তানের জীবন গঠনে তাদের ভুমিকা অতি নগণ্য। সারা দিন পরিশ্রম শেষে বাবারা বেশী স্নেহ প্রবণ হন।
মায়েরা বাসা বাড়ীতে সব সময় সংসার এবং সন্তান লালন পালনে ব্যস্ত। অবশ্য ইদানিং কালে মেয়েরা বাড়ীর বা বাসার বাইরে উপার্জনে সক্ষম হলেও তারা সংখ্যার দিক থেকে খুব বেশী নই। আসলে দিনে রাতে একজন মা, সন্তানকে বেশী সময় দিতে পারেন। অর্থাৎ তাদেরকে বেশ ভালো ভাবে মনিটরিং করতে পারেন। তাই একজন সন্তানের জীবন বা ভবিষ্যৎ গঠনে সন্তান খুব ছোট থাকতেই মা তাদেরকে সঠিক পথে পরিচালনা করার প্রচুর সুযোগ পান। সন্তানদের খুব অল্প বয়স হতে যদি মা তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারেন। তবে তারা জীবনে প্রতিষ্ঠিত বা মানুষের মত মানুষ হতে পারে।
তাই সন্তানের মানুষের মত মানুষ হবার ক্ষেত্রে। অথবা অধঃপতনে পতিত হবার ক্ষেত্রে সব টুকু কৃতিত্ব মায়ের, বাবার নই। সুতরাং সঠিক দিক নির্দেশনার মাধ্যমে সন্তান এর ভালো অথবা এর অভাবে অধঃপতনের জন্য সার্বিক ভাবে মা দায়ী।