সত্য নির্মল এবং পবিত্র আর মিথ্যা খারাপের প্রতীক। আমরা সব সময় সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢেকে রাখার চেষ্টা করি কিন্তু সত্য এক সময় ঠিকই প্রকাশ পায়। আর সকল জাগতিক সমস্যার মূল হলো মিথ্যা। মিথ্যা আমাদের সাময়িক তৃপ্তি বা মুক্তি দিতে পারে। কিন্তু মিথ্যার অনাবিল শান্তি দেয়ার ক্ষমতা নেই। বর্তমানে আমাদের জীবন অনেকটা মিথ্যা নির্ভর হয়ে গেছে। এখন মিথ্যা আমাদের জীবনের নিত্য সঙ্গী। মিথ্যার আড়াঁলে ছল চাতুরি ছাড়া জীবন যেন আর চলে না। এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে মিথ্যার অবতারণা নেই। কিছু কাল আগে হয়তো দুই দশক হবে। আমাদের মাঝে মিথ্যার আশ্রয় নেয়ার প্রবণতা এতো ছিল না! তখন মানুষের জীবন ছিল নির্মল।
কাজ উদ্ধার বা সুবিধা পাবার জন্য আমরা দৈনন্দিন জীবনে অহরহ মিথ্যা কথা বলি। ব্যবসা ক্ষেত্রের কথাই ধরুন! বিষাক্ত ফরমালিনযুক্ত সবজী, মাছ বা অন্য কোন দ্রব্য বিক্রির সময়। আমরা ক্রেতাকে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বলি, একেবারে ফ্রেশ, বাজারে এর চেয়ে ভালো জিনিস আর হয় না! একজন ক্ষমতাবান ব্যক্তি যখন অন্যায় কাজ করেন বা অন্যায় কথা বলেন! তখন চাটুকার হিসাবে আমরা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বলি, হুজুর আপনি ঠিক কাজ করেছেন, নায্য কথা বলেছেন! অনেকেই টাকার কাছে বিক্রি হয়ে আদালতে হলফনামা পাঠ করে, মিথ্যা স্বাক্ষী দিয়ে বলে। ধর্মাবতার আমি নিজের চোখে দেখেছি, এই লোকটাই খুন করেছে। এ ভাবে মিথ্যার নিকট অনেক সত্য বিক্রি হচ্ছে।
সত্যের জয় সুনিশ্চিত, কখনও তা দ্রুত আবার কখনও ধীরে। বর্তমান সমাজে মিথ্যাবাদী মানুষ এবং মিথ্যার প্রয়োগ অত্যন্ত বেশী। আবার সত্য তার স্বাভাবিক প্রকাশ সব সময়ে এক ভাবে করে না। সত্যের প্রকাশ রাত শেষে ভোরের সোনালী সুর্যের আভা ছড়িয়ে পরার মত। সম্প্রতি মানুষের মধ্যে ইর্ষা, স্বার্থপরতা, মিথ্যা এবং চল চাতুরী অনেক বেশী। যার ফলে সত্য তৎক্ষনাৎ প্রকাশ পায় না। কিন্তু সত্য একদিন কোন না কোন ভাবে প্রকাশ পাবেই। সঠিক সময়ে সত্য প্রকাশ এবং প্রতিষ্ঠিত না হবার ফলে মানুষের জীবনে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটে। এমন বিপর্যয়ে ছোটখাট ক্ষতি থেকে শুরু করে প্রাণ নাশ পর্যন্ত ঘটতে পারে।
স্বাভাবিক দৃষ্টিতে সঠিক সময়ে সত্য প্রকাশ না পাবার ফলে বা প্রতিষ্ঠিত না হবার ফলে। মিথ্যা বা মিথ্যাবাদীর যে জয় হয় আসলে সেটা জয় নই, এক ধরণের পরাজয়। সব চেয়ে বড় কথা হলো। সত্য কোন না কোন ভাবে একদিন প্রকাশ পাবেই। এ ক্ষেত্রে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে জয় লাভকারী। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন গুণ পরিমান ক্ষতির সম্মুখীন হয়। যা গভীর ও নিবিড় পর্যবেক্ষণে বুঝা যায়।