সংসারে টিকে থাকতে হলে, নিজেকে একটি ভালো অবস্থানে নিতে হলে, নিজের উপর ভরসা করতে হবে! কারও উপরে নির্ভর করা অর্থ নিজেকে জড় পদার্থে পরিণত করা। একজন মানুষ তখনই নিজের শক্তির বলে বলিয়ান হন, যখন তিনি আত্ম নির্ভরশীল হন। সঙ্গত কারণে, এখানে নিজের শক্তি বলতে বুঝাতে, নিজের আত্ম বিশ্বাসকে বুঝায়। আত্ম বিশ্বাস এমনই এক শক্তি যা কোন কোন ক্ষেত্রে এক জন মানুষকে প্রায় অসাধ্য সাধনের শক্তি এবং সাহস জোগায়। আমরা সবাই আবার এ শক্তির সঠিক ব্যবহার করতে পারি না! তাই আমাদের পক্ষে এ শক্তির ক্ষমতা অনুধাবন সম্ভব হয় না! এ কারণেই আমরা জীবনে সব ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছি এবং প্রতিনিয়ত পরাজিত হচ্ছি।
জগত সংসারে মানুষই এক মাত্র প্রাণী যারা বিবেক বা মস্তিক দ্বারা সম্পুর্ণ রুপে পরিচালিত হয়। অন্য প্রাণীর ক্ষেত্রে যা অসম্ভব। অর্থাৎ মানুষের নিজের সার্বিক চিন্তাধারার প্রতিফলন ঘটে তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে। মুল কথা হলো, যার চিন্তা চেতনা যেমন তার বহিঃ প্রকাশও তেমন! যদি তাই হয় তবে, আমাদের নিজের শক্তি, আস্থা বা আত্ম বিশ্বাসের সকল প্রতিফলন ঘটবে নিজস্ব কাজ কর্মের মাধ্যমে। এ কাজটাতে অমুকের সাহায্য নেব! আমার কঠিন বিপদের দিনে সে আমাকে সাহায্য করবে ইত্যাদি বিষয়গুলো আমাদের পর নির্ভরশীলতা নির্দেশ করে। আসলে মানুষের নিজস্ব চিন্তাধারা বোঝার ক্ষমতা আমাদের নেই। তাই অন্যের মনের জটিলতা, কুটিলতা বা স্বার্থ চিন্তা আমরা বুঝতে পারি না।
আমরা বিপদে আপদে বা সমস্যায় যখন কারও সাহায্য চাই, তখন কিন্তু অনেকেই মনে মনে এ থেকে বের হবার চেষ্টা করে। অথবা আমাদের আরও বিপদে ফেলে তা থেকে লাভবান হবার চেষ্টা করে। তাই অন্যের প্রতি নির্ভরশীলতা আমাদের জন্য হিতে বিপরীত হবে বা আরও বেশী ক্ষতির কারণ হবে। বর্তমানে অন্যের সাহায্য পাবার ক্ষেত্রে এমন চিত্রই দেখা যায়। এবার নিজের সিদ্ধান্ত নেয়ার পালা! কারও সাহায্য নিয়ে নতুন করে বিপদে পড়বেন, না নিজের সঠিক পথে এগুবেন।
আপনি এ সংসারে কারো প্রতি নির্ভরশীল হয়েছেন তো মরেছেন। কারণ সমসাময়িক কালে মানুষের মধ্যের স্বার্থপরতা আপনাকে তো সাহায্য করবেই না! উল্টো আপনাকে বিপদে ফেলবে। তাই নিজের যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা এবং একাগ্রতা দিয়ে নিজের কাজ নিজেই করা উত্তম। এতে অভিজ্ঞতার অভাবে কাজে হয়তো ধীরগতি আসতে পারে কিন্তু অকর্মা প্রবাদ থেকে আপনি মুক্তি পাবেন এবং নিজের বিবেকের কাছে স্বচ্ছ থাকবেন।