বিরহের কথা চিন্তা করা বাদ দিয়ে নিজেকে নিয়ে ভাবুন। জীবনে অনেক কিছু আসবে, আবার হারিয়েও যাবে, এটাই প্রকৃতির নিয়ম। কাজকে প্রাধান্য দিন, ভালো থাকবেন। জীবনে চলার পথে ব্যর্থতা, অপ্রাপ্তি, হতাশা, পরাজয় ইত্যাদি আমাদের নিত্য দিনের সঙ্গী। সুতরাং এ সব বিষয় নিয়ে ভাববেন না। নিজেকে বুঝান এবং কর্ম মুখর জীবনের কর্ম ব্যস্ততা নিজের মধ্যে আনুন। বিচ্ছেদ বা বিরহের কথা ভুলতে কর্ম ব্যস্ততার কোন বিকল্প নেই। কাজের মধ্যে ডুবে থাকুন, প্রয়োজনে দিন রাত পরিশ্রম করুন। দেখবেন, আপনার মনের ভিতর হতাশা ভর করার সুযোগ পাবে না। কেউ আপনাকে ছেড়ে গেছে বা কোন বিষয়ে হেরে গেছেন, এ সব নিয়ে ভাবা আপনার জীবনের লক্ষ্য নই।
আপনার আমার সবার ব্যক্তিগত মর্যাদা বা মুল্য আছে, কেউ ফেলনা অথবা খেলনা নই। কেউ আপনাকে নিয়ে খেলবে আর আপনি তাকে সুযোগ দেবেন, এটা ঠিক নই। মনে রাখবেন, মানুষ হিসেবে আপনার একটা মুল্যবোধ আছে। কেউ যদি আপনার মানসিকতাকে আঘাত করে তবে তার জবাব দিন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে, এতে আপনার হৃদয় তৃপ্ত হবে। কেউ স্বার্থের কারণে আপনাকে ছেড়ে গেলেও, আপনি বিরহের চিন্তায় চোখের জল ফেলবেন না। কারণ এটা আপনার দুর্বলতা হিসেবে ধরা হবে।
বর্তমানে আমাদের মধ্যে হতাশাবোধ খুবই বেশী। বিশেষ করে এখনকার তরুণ তরুণীরা তথাকথিত ঠুনকো প্রেম, ভালোবাসার কারণে হতাশাগ্রস্খ। বিরহের কাতরতায় তারা এতোটা কাতর যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। সোস্যাল মিডিয়াতে একটু ঢুঁ মারুন দেখবেন, ভুলিনি তোমায়, আজও তোমার পথ চেয়ে আছি। কি দোষ ছিল আমার, একা আছি বেশ আছি, সুখে থেকো, মনে রেখ তোমায় একদিন কাঁদতে হবে, ইত্যাদি কত্তো কথার ফুলঝুড়ি। এ সব ফালতু ইমোশন দিয়ে বর্তমানে জীবন চলে না। যদি ক্ষমতা থাকে তো নিজের ভিতরের অমিত শক্তি এবং কর্ম দক্ষতাকে কাজে লাগান।
আপনার অলস মস্তিষ্কের খেয়ালীপনা নই, ব্যক্তিত্বের সাথে নিজের কর্ম দক্ষতার ত্রিশ ভাগকে কাজে লাগান। দেখবেন, কারও দিকে এক মুহূর্ত তাকানোর সময় পর্যন্ত আপনার নেই। নিজেকেই যেখানে সময় দেয়া কষ্টকর সেখানে মাথার ভিতর শয়তান বাসা বাঁধবে, এ ধারণা অবান্তর। কাজ করুন, নিজে ভালো থাকুন। পরিবার ও সমাজকে ভালো রাখতে সাহায্য করুন। আর কোন বিষয়ে ব্যর্থতাকে সব সময় ধরে নেবেন, আপনার জীবনের চরম শিক্ষা। বাঁধা না থাকলে বাঁধা ডিঙ্গানোর যে মজা তা বুঝবেন কেমন করে। সুতরাং ঘুরে দাঁড়ান, বিরহের দিকে নই বাস্তবতার দিকে তাকান, আপনার জীবন হবে কর্ম মুখর ও সুন্দর।