নগ্নতা কখনও নারীর প্রকৃত সৌন্দর্য্য হতে পারে না। নারীর প্রকৃত সৌন্দর্য্য ভদ্রতা, শালীনতা, রক্ষণশীলতা এবং সার্বিক আচার আচরণের উপর নির্ভর করে। নগ্নতার সর্বগ্রাসী থাবা আমাদের সুশীল ও সুন্দর সমাজকে প্রতিনিয়ত কলুসিত করছে। নগ্নতার বহিঃ প্রকাশ বলতে আমরা সাধারণত নারী সৌন্দর্য্যের প্রকট প্রকাশকে বুঝি। নগ্নতার মাধ্যমে বিবিধ পন্থায় নারীরা দেহকে পর পুরুষের নিকট লোভনীয় ভাবে উপস্থাপন করে। নিজের স্বামী ছাড়া অন্য কোন পুরুষের মধ্যে কামনার সৃষ্টি হয়, এমন ভাবে নারী দেহ প্রদর্শনই মুলত নগ্নতা। নগ্নতা দিয়ে একজন নারী স্বার্থ হাসিলের জন্য, পুরুষের মনে শুধু কামনার আগুন জ্বালায়, ভালোবাসা নই! ভালোবাসা সৃষ্টিতে শালীনতা ও আত্মার পবিত্রতার প্রয়োজন।
মুলত পশ্চিমা সংস্কৃতি বা নগ্নতা প্রদর্শন আমাদের দেশে খুব বেশী প্রভাব ফেলেছে। অনেক মেয়েরা আঁটশাট জিন্সের প্যান্ট ও শার্ট পরে স্বাভাবিক ভাবে চলা ফেরা করছে। তাদের এমন পোষাক অন্যের চোখে নিজের দেহকে প্রকট করে তুলছে। ফলে অনেকেই কামনা ও লালসার দৃষ্টিতে মেয়েদের দিকে তাকিয়ে থাকেন। তরুণীরা বর্তমানে সালোয়ার কামিজ পরিধানের পর ওড়নাকে শুধু এক দিকে ঝুলিয়ে রেখে বক্ষ প্রদর্শনের মাধ্যমে পুরুষকে প্রলুব্ধ করছে। অনেক নারী আছেন যারা আবার বোরখা পরিধান করে ধর্মীয় ভাবধারা বজায় রাখার চেষ্টা করেন। কিন্ত তারা দেহের নীচের অংশে বোরখা এতো আঁটশাট করে রাখেন। তা দেখে সত্তর বছরের বৃদ্ধেরও ভিমরি খাবার মত অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে।
অধিকাংশ নারী বিভিন্ন ভাবে পর পুরুষকে নিজের দেহ দেখানোর চেষ্টা করছে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় নিজের দেহকে অন্যের চোখে তুলে ধরছে। এসব প্রকৃত অর্থে নারীর প্রায় নগ্ন রুপকে পর পুরুষের নিকট প্রকট করে তুলছে। এমন রুপের নগ্নতা দেখে অনেকের মনেই সে নারীকে পাবার জন্য কামনা বাসনা জাগে। কিন্তু মন থেকে রুপ সৌন্দর্য্যের কোন প্রসংশা আসে না। একই সাথে নারীদের এমন অবাধ নগ্নতা প্রদর্শন রাস্তার বখাটে এবং অস্থিরমতি ছেলেদের প্রলুব্ধ করছে। বখাটেদের যৌন অপরাধ করায় ইন্ধন জোগাতে নারীদের এমন নোংরামী খুব বেশী প্রভাব ফেলছে। এই পরিস্থিতি গুলোর বিচার করে দেখুন, এমন নগ্ন রুপ কি আসলেই সৌন্দর্য্য হতে পারে।
আজকাল বিশেষ করে নারীরা পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে বেশী প্রভাবিত। তারা সামাজিক চলাফেরা এবং যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে নিজেদের সৌন্দর্য্য প্রকাশের জন্য প্রায়ই নিজেদের রুপের নগ্নতা প্রকাশ করেন। এতে নিজের সৌন্দর্য্য তো প্রকাশ পায়ই না। বরং সর্ব স্তরের পুরুষ জাতির কামনা এবং লালসাকে বৃদ্ধি করে। সামাজিক অবক্ষয় রোধে এ জাতীয় নগ্নতা পরিহার করা উচিত।
মুসলমান মেয়েরা বোরখা পরে, তথাপি মুসলমানদের জনসংখ্যা দ্রুত বাড়ে, আর পশ্চিমী দেশের লোকেরা কম পোশাক পরলেও জনসংখ্যা তেমন বাড়ছে না। এর মানে হল, বেশি পোশাকে বেশি যৌনতা, আর কম পোশাকে কম। আবার এটাও হতে পারে, অস্বাভাবিক বেশী যৌন চিন্তার হাত থেকে বাঁচার জন্যই মুসলিমরা গোটা শরীরটা যতটা বেশি সম্ভব কাপড় দিয়ে মুড়ে রাখার চেষ্টা করে! আর যৌন চিন্তার প্রতি এই অস্বাভাবিক দুর্বলতাকে আড়াল করার জন্য, বেশী কাপড় পরার স্বপক্ষে, নৈতিকতার দোহাই দিয়ে, ভালো ভালো কথা সাজায়। এটা স্বীকার করতেই হবে, কুচিন্তাকে পোশাক দিয়ে ঢেকে রাখার চেষ্টা করা বৃথা। বাস্তবে কী দেখা যায়? জৈব পদার্থ বেশীক্ষণ ঢাকা থাকলে তাড়াতাড়ি নষ্ট হয় অর্থাৎ পোকারা দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে। মানুষের শরীর জৈব পদার্থ। সুতরাং, শরীরকে অকারণে সবসময় ঢেকে রেখে, শুধু যে সেটাই নষ্ট হচ্ছে তাই নয়, সঙ্গে সঙ্গে মনেও কুচিন্তার প্রভাব বাড়ছে! তাই নয় কী?