ছোট ছোট ব্যাপারে আনন্দ খুঁজুন, জীবনের জন্য আনন্দ অপরিহার্য। আমরা সব সময় কামনা করি আমাদের জীবনে হঠাৎ চমৎকার কিছু ঘটবে। যা আমাদের জীবনকে পুরোপুরি পাল্টে দেবে। আসলে তা শুধু স্বপ্নেই সম্ভব এবং আমাদের জন্য অবাস্তব কল্পনা মাত্র। কয়েক লক্ষে এমন ব্যতিক্রম উদাহরণ এক জনের কপালে জুটবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। সব কিছুই যদি বিনা শ্রমে অর্জন সম্ভব হতো। তা হলে সৃষ্টিকর্তা কেন আমাদের জীবনে শুধু শুধু এতো কষ্ট, জটিলতা দিলেন। কখনও কি ভেবেছেন, সব কিছুই যদি এমনি এমনি আমাদের কাছে হাজির হতো। চিন্তাশীল মস্তিষ্ক এবং দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গসমুহ তাদের গুরুত্ব হারাতো।
আসা যাওয়ার হিসেবে, আমাদের জীবনে সুখের চেয়ে দুঃখ এর পরিমান বেশী। তবে সুখ বা আনন্দ সংখ্যার দিক থেকে সামান্য হলেও তার অনুভূতি অত্যন্ত তীব্র। তীব্র বলছি এই কারণে। অনেক সময় আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া বহু দুঃখজনক পরিস্থিতির শোক। সামান্যতম সুখের বা আনন্দের অনুভূতিতে আমরা ভূলে যেতে পারি। তাই সুখ বা আনন্দ আমাদের জীবনের গতিময়তার প্রতীক। প্রতীক নতুন উদ্যোম এবং অনুপ্রেরণার। চ্যালেন্জ এবং প্রতিকূলতায় ভরা মানব জীবনে ছোট আনন্দানুভূতি দিয়েই আমাদের জীবনকে অর্থবহ এবং মধুময় করে তুলতে হবে। হঠাৎ প্রচন্ড সুখের বা আনন্দের ঢেউ এসে আমাদের জীবনেকে সুখের সাগরে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। এমন আশা অমুলক এবং অর্থহীন।
আসুন এবার নিজেদের স্বাভাবিক জীবনে নিত্য ছোট কাজের গতিশীলতার মধ্যে কিভাবে আনন্দের সঞ্চার সম্ভব তা বোঝার চেষ্টা করি। ধরি, আপনি সামাজিক অবস্থানে মোটামুটি স্বচ্ছল। সুন্দর ভাবে এবং কোন রকম ঝুট ঝামেলা ছাড়ায় আপনার জীবন সুন্দর ভাবে কেটে যাচ্ছে। কিন্তু জীবনের কোন অর্থ এবং উদ্দেশ্য খুঁজে পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় পাশের বাড়ীর অপেক্ষাকৃত নিম্নবিত্ত দুইটি পরিবারের স্বাভাবিক জীবন যাত্রার খোঁজ নিতে চেষ্টা করুন। তাদের কোন সমস্যা না থাকলেও। একজন প্রতিবেশীর খোঁজ নেয়া আপনার নৈতিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব। আপনি তা সঠিক ভাবে পালন করেছেন। দেখবেন, আপনার মনে কেমন যেন, এক ধরণের শান্তি বিরাজ করছে।
আর যদি দেখেন, তারা খুবই অভাবগ্রস্থ। তবে যথা সম্ভব গোপনে আপনি তাদের সাধ্যমত সাহায্য করুন। দেখবেন, আপনার মনে একটা অন্য রকম সুখের অনুভূতির সৃষ্টি হচ্ছে। এ ভাবে ছোট কাজ দিয়ে সুখে থাকা যায়। সংসারের সবাইকে নিয়ে গল্প করা, বেড়াতে যাওয়া, বাড়ীর ছোট্ট শিশুর একটা খেলনা পাবার আব্দার পূরণ করা। বাড়ীর কাজের লোকটির সমস্যা জানা এবং তার সমস্যা সমাধান করা। কেউ অসুস্থ হলে তাকে মানবিক সাহায্য করার মাধ্যমে ছোট ছোট সুখ বা আনন্দের সৃষ্টি করতে পারেন। দেখবেন জীবন আগের চেয়ে অনেক মধুময় এবং অর্থবহ মনে হবে।