কম বেশী দোষ সবারই থাকে, কারোটা জানা যায়, কারোটা জানা যায় না। তার মানে বিষয়টি কি দাঁড়ালো, বর্তমানে আমরা কেউ ধোয়া তুলসী পাতা নই। অনেক সময় বিভিন্ন কারণে কারও কাজ নিয়ে গুজব সৃষ্টি হয়। তখন আমরা সবাই তার দোষ নিয়ে হইচই শুরু করে দিই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অথবা অন লাইন যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যক্তির নামে হাজারো দুর্নাম, কুৎসা রটনা ও সমালোচনা হয়। সে সময়ের সমালোচক এবং বিচারকের দৃষ্টি যদি আমার উপর নিক্ষেপ করা হয়। তাহলে আমি নিজেই আমার কম বেশী বা নিকৃষ্ট দোষ বুঝতে পারবো।
আমরা সবাই জন্মের পর হতে জেনে অথবা না জেনে কম বেশী, ছোট বড় অপরাধে অপরাধী ও দোষে দোষী। সুতরাং অন্যের দোষকে সবার চোখে ফুটিয়ে তোলার আমাদের এই প্রবণতা এক ধরণের মূর্খতা বা অজ্ঞতার পরিচয়। ধরি কোন এক পদস্থ কর্মকর্তা যিনি প্রত্যক্ষ ভাবে বড় একটি প্রতষ্ঠান পরিচালনা করেন। দিনের আলোতে তিনি কাজের প্রতি বিশ্বাসী, সবার প্রতি সহানুভূতিশীল এবং একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। সবার সমস্যার বাস্তব সমাধানে তিনি তৎপর। কিন্তু যেই না সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত আসে তার সারা দিনের সাধু সন্ন্যাসীর লেবাস খসে পরে। এবং একজন অন্য রকম মানুষ বেড়িয়ে পরে।
এখানে তিনি তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোন এক অসহায় নারীর অসহায়ত্বের সুযোগ নেয়া বহু নারী ভোগের লোভে লোভী একজন উন্মত্ত লম্পট। এখানে তথাকথিত শ্রদ্ধেয় কর্মকর্তার লাম্পট্য উল্লেখিত নির্যাতিত নারী পরিস্থিতির কাছে হার মেনে প্রকাশ করতে পারেননি। সুতরাং তার এই মারাত্মক অপরাধ কারও নিকট প্রকাশ পায়নি। এবার আসুন অন্য একটি উদাহরণে যাই। ধরি কোন এক এলাকার চেয়ারম্যান দু পক্ষের বিবাদের গ্রাম্য শালিশে এক পক্ষের কাছ হতে মোটা অংকের টাকা খেয়েছেন। সে অত্যন্ত কৌশলে বিচারকালীন সময়ে বিচারের রায়কে, ঘুস প্রদানকারী পক্ষের অনুকূলে এনে দিলেন। এখানেও লোক চক্ষুর আড়ালে চেয়ারম্যানের করা অপরাধ বা ঘুষ নেবার দোষটি অপ্রকাশিত রয়ে গেল।
উপরের দুটি উদাহরণে সবার সামনে ভালো মানুষ সেজে থাকা দুই জন ব্যক্তিই কোন এক দিক থেকে দোষী। কিন্তু তা আমাদের জানার বাইরে রয়ে গেছে। এখানে মাত্র দুটি উদাহরণ টানা হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে এ অবস্থাটি বাস্তবতার দিক থেকে আপনার আমার সকলের ক্ষেত্রে সম ভাবে প্রযোজ্য অর্থাৎ কম বেশী দোষে আমরা সকলেই দোষী, পার্থক্য শুধুমাত্র প্রকাশ না পাওয়াতে।