অন্যকে খারাপ ভাবছেন। নিজেকে একবার অন্যের জায়গায় বসিয়ে দেখুন দেখবেন, অন্যদের আপনি যতটা খারাপ ভাবছেন, তারা আসলে ঠিক ততোটা খারাপ নই। আপনি আমি সবাই যার যার অবস্থানে নিজেকে সঠিক, চালাক, ন্যায় নীতিবান, বুদ্ধিমান, মহানুভব, পরোপকারী, ইত্যাদি ভেবে থাকি। আর একই সাথে অন্যকে ঠিক এর বিপরীত অবস্থানে রেখে বিচার করি, যা সঠিক নই। এ ধারণার সব চেয়ে বেশী চর্চা বা প্রয়োগ হয়, অন্যকে খারাপ হিসেবে মুল্যায়নের ক্ষেত্রে। আপেক্ষিকতা কোন কিছুর বিচার বা মুল্যায়নের সঠিক মাপকাঠি নই, বরং এটি একটি অনুমান প্রক্রিয়া মাত্র। আমি আমার বিচারে যাকে খারাপ বলছি বা ভাবছি, সে হয়তো তেমন খারাপ আসলে নই। এমন হতে পারে আমিই বরং তার চেয়ে বেশী খারাপ।
বর্তমান কালে আমাদের বদ্ধমুল ধারণা হলো। তাবৎ দুনিয়ার সবাই খারাপ, আমিই জগতের এক মাত্র ভালো ব্যক্তি। আমিই সবার চেয়ে বেশী বুঝি, আর কেউ নই। আসলে আমাদের এমন অবিবেচকের ধারণা প্রকৃত পক্ষে আমার নির্বুদ্ধিতা ও আহাম্মকের পরিচয় বহন করে। আমরা সচরাচর নিজের কাজ বা পদক্ষেপ এর কোন বিচার করি না বললেই চলে। আমরা আমাদের জীবনে দৈনন্দিন ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত হাজারো খারাপ কাজ করছি। কিন্তু সে সব জন সন্মুখে আসলে প্রকাশ পায় না। তাই আমি ভালো, আর যার ছোট্ট ছোট্ট ভূলগুলো সবার গোচরে আসে তাই, সে হয় খারাপ।
আপনি বা আমি আসলে, কেউই পারফেক্ট, নিখুঁত এবং শতভাগ ভালো নই। কোন না কোন দিক থেকে আমাদের অপূর্ণতা আছে। যদি তাই হবে, তবে আমি অন্যদের খারাপ বলি কি ভাবে। আজ আমি যে ব্যক্তিকে তার কাজের জন্য খারাপ ভাবছি। ধরি ঠিক সেই অবস্থানে আমি আছি। এখানে আমার দ্বারা হয়তো সেই ব্যক্তির চেয়ে বেশী অন্যায়, খারাপ কাজ বা মানবিকতা ও মানবতা ভূ লুন্ঠিত হবে। ঘরে ও বাইরে, উভয় ক্ষেত্রে আমাদের কিছু কিছু অপূর্ণতা ছিল, আছে এবং থাকবে। আমার সবাই নিজের চোখ দিয়ে অন্যদের দেখি। তাই অন্যদের দোষ ত্রুটিগুলো আমাদের চোখে বেশী ধরা পরে।
আমরা নিজের চোখে অন্যদের না দেখে যদি নিজেদেরই শুধু দেখতে পেতাম। তবে আমাদের চোখে নিজেদের খারাপ বা অপরাধী এবং অন্যদের সাধু মনে হতো। মোট কথা অপেক্ষিকতা বিচারে অন্যদের খারাপ বা অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করার পূর্বে, বিচক্ষণতার সাথে চিন্তা করা উচিত।